শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিজয় দিবসে জামায়াতের র‍্যালী-বরেন্দ্র নিউজ গোমস্তাপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে আলোচনা সভা-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাট উপজেলা বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ গোদাগাড়ীতে ৫০ গ্রাম হিরোইনসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক-বরেন্দ্র নিউজ গোমস্তাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে দিনব্যাপী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে শিবিরের কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ
ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যা ভাবছেন রাবি ছাত্রনেতারা -বরেন্দ্র নিউজ

ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যা ভাবছেন রাবি ছাত্রনেতারা -বরেন্দ্র নিউজ

হাদিউল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি:
স্বাধীনতা-উত্তর যেকোনো রাজনৈতিক সংকটে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে ছাত্র রাজনীতির কর্ণধারেরা। সেসময়ের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস গুলো সাক্ষী হয়ে আছে গণমাধ্যমের পাতায়। তাই ধরেই নেওয়া হত, গণতান্ত্রিক রাজনীতির সূতিকাগার হলো ছাত্র রাজনীতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সোহার্দ্য পরিবেশ চর্চা হতো ছাত্র রাজনীতির।
কিন্তু, ৯০ এর দশকের পরবর্তী থেকে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিকরণের ফলে যে দলই ক্ষমতায় গিয়েছে সে দলের ছাত্রসংগঠনগুলো জড়িয়ে পড়েছে একের পর এক বিতর্কিত কান্ডে। জনমনে এখন আতঙ্কের এক নাম হচ্ছে ছাত্র রাজনীতি।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশের সচেতন মহল থেকে।
অনেকে মনে করছেন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হোক। আবরার হত্যা কান্ডের প্রেক্ষিতে শীঘ্রই বুয়েটের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। যেটা অনেকেই ছাত্ররাজনীতির অশনিসংকেত মনে করছেন।
তাহলে কি হওয়া উচিত ছাত্র রাজনীতির মূলনীতি?
কিংবা আদৌ কি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত?
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রনেতা। ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো তাদের মন্তব্য:-

আব্দুল মজিদ অন্তর
আহবায়ক, রাকসু আন্দেলন মঞ্চ

আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা, খাওয়া আর নির্ভয়ে ঘুমানোর নিশ্চয়তা চায়, যখন হলে হলে এবং রুমের ভিতর রাজনীতি প্রবেশ করে তখন তার এই নিশ্চয়তা থাকে না। প্রতিটি হলে হলে ছাত্রলীগ পলিটিকাল ব্লক গড়ে তুলে দখলদারিত্ব কায়েম করে রেখেছে। কার্যত হল প্রশাসনের দুর্বলতা, অসহায়ত্ব এবং আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ছাত্রলীগ আবাসিক হলগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সিট বাণিজ্য আর নির্যাতনের আখড়ায় পরিনত করেছে। প্রতিটি সাধারণ শিক্ষার্থীর কাছে হল একটি আতঙ্কের নামে পরিনত হয়েছে। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে রাজনীতি নেতিবাচক হিসেবে প্রতিয়মান হয়।

আমরা প্রায় শিক্ষার্থীদের কাছে শুনে থাকি আই হেইট পলিটিক্স। এটাকে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ মনে করে থাকেন যারা পলিটিক্স সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখেন না, তারাই আই হেইট পলিটিক্স বলে থাকেন।

আমি মনে করি বর্তমান প্রজন্ম চোখের সামনে যে রাজনীতি দেখছেন তাকে কোনোভাবেই পছন্দ করার মত নয়, ছাত্র রাজনীতি যদি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য হতো, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে হতো তাহলে শিক্ষার্থীরা সেটাকে অবশ্যই পছন্দ করত।

এখন অনেকেই রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছেন, এর কারন ছাত্র রাজনীতি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কিছু করতে পারছে না, উল্টো মারামারি, হানাহানি আর দখলদারিত্বের মাধ্যমে নেতিবাচক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়ছে। আমাদের এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তবেই আমরা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারব।

এহসান মাহফুজ
সহ-সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ

আমি মনে করি ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে সেটা পরিশুদ্ধ করে শিক্ষার্থীবান্ধব হতে হবে। মাথাব্যথা হলে কি মাথা কেটে ফেলা সমাধান নাকি ওষুধ দেয়া সমাধান! ছাত্ররাজনীতি না থাকলে দেশের নেতৃত্ব কোথায় তৈরি হবে।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি করেই আজ তিনি এ পর্যন্ত এসেছেন। ছাত্ররাজনীতি না থাকলে তো ব্যবসায়ীরা নেতৃত্বে আসবে, নেতৃত্ব সংকট তৈরি হবে। ব্যক্তিত্বে, আচরণে, ব্যবহারে, কর্মে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত অনুসরণ প্রয়োজন, তবেই গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে পূর্বের ঐতিহ্য সুন্দরভাবে ফিরে আসবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির চর্চা আরও বাড়ানো দরকার। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্বে সংকট রয়েছে। প্রগতিশীল সংগঠন গুলো তাদের সাংগঠনিক চর্চা নিয়মিত রাখলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। একজন ছাত্রনেতার মনে রাখতে হবে যে ছাত্রদের জন্যই তার রাজনীতি, তাহলেই ভালো রাজনীতি সম্ভব।

বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলনের সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে, সেটি মনে রেখে প্রগতিশীল চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীবান্ধব, সচেতন, দেশপ্রেমী নেতৃত্ব তৈরি প্রয়োজন।

সুলতান আহমেদ রাহী
ভারপ্রাপ্ত সা. সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল

এখন ছাত্রলীগ যে রাজনীতি করছে, তা মানুষকে কাঁদাচ্ছে, মেরে ফেলছে। আসলে এই রাজনীতি কি শিক্ষার্থীদের কোনো উপকার হচ্ছে? শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, ছাত্র রাজনীতি দেশের ভবিষ্যৎ এটা সর্বজন স্বীকৃত কথা আর ছাত্র রাজনীতি ছাত্র-ছাত্রী দাবী আদায়ের প্লাটফর্ম।

বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, ৯০ স্বৈরাচার আন্দোলন, সড়ক নিরাপদ আন্দোলন, বেতন-ভ্যাট বৃদ্ধি আন্দোলন সহ সকল যোক্তিক আন্দোলনে ছাত্র রাজনীতি একটা ঐতিহ্য লালিত হয়ে আসছে। একটা জীর্ণ সমাজ ভেঙ্গে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই ছাত্র রাজনীতির ধর্ম।

আর আমি ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে একমত নই। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না আমাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ছাত্র রাজনীতি।ভাষা আন্দোলন,স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ছাত্র রাজনীতি।

আমাদের দেশে বর্তমান সংকটকালীন সময়েও ছাত্ররাই প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর দমাতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার ষড়যন্ত্রে মত্ত একটি দেশী-বিদেশী মহল। একটি অশুভ শক্তি দেশের অভ্যন্তরে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে।

আমরা মনে করি তিনটি পক্ষ ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে, ১.যারা দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দেশ বিক্রি ষড়যন্ত্রে আছে ২. প্রতিবাদ কণ্ঠস্বর বন্ধ করে স্বৈরচারী শাষনব্যবস্থা সহায়তা করার ষড়যন্ত্রে যারা আছে ৩. মৌলবাদ, জঙ্গি যারা দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।

ছাত্র রাজনীতিতে কিছু অসংগতি থাকতে পারে। তবে আপনার মাথা ব্যথা বলে মাথা কেটে দিতে হবে এমনটি ঠিক নয়। ছাত্র রাজনীতিতে কিছু সংস্কার প্রয়োজন। ছাত্র রাজনীতিতে সন্ত্রাসবাদের কোনো অবস্থান যাতে না থাকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে।

রিদম শাহরিয়ার
আহবায়ক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটি একটি ভয়ংকর অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত এবং সকল ধরণের বিরোধী মত এবং তার ভিত্তিতে সংগঠিত শক্তিকে দমনের একটি হাতিয়ার। এটি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একটি প্রতারণাও বটে।

কার্যত বুয়েট চলে ৬১’র অধ্যাদেশ অনুযায়ী, যে অধ্যাদেশে বুয়েটে ইতোমধ্যেই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। দ্বিতীয়ত, বুয়েটে গত এক দশকে ছাত্র রাজনীতি ছিলই না। শুধু ছিল রাজনীতির নামে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, নির্যাতন। প্রত্যেক ক্যাম্পাসে, হলে হলে টর্চার সেল গুলো একদিনে তৈরি হয়নি। প্রশাসনের পৃষ্টপোষকতায় এই টর্চার সেল গুলো গড়ে উঠেছে।

আমরা এর আগেও দেখেছি বিভিন্ন সময়ে এভাবেই প্রকাশ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন তকমা দিয়ে মারধর করার ঘটনা। রাজনীতি নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়েই রাষ্ট্র, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমাজের যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদ, যেকোন রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য, মতামত দেওয়ার অধিকার দমন করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বলে আমি মনে করি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT